‘“Stars mean different things to different people. For travellers, stars tell them where they are, where they are going. For others, they are just little lights in the sky. For scholars, they are the world of the unknown, yet to be discovered and understood. For my businessman, they are gold. But all stars stay silent. And you? No one else in the world will see the stars as you do… For you, and only for you, the stars will always be laughing.”’
– The Little Prince by Antoine de Saint-Exupéry
আপনি যখন সৌরজগতের গ্রহগুলোর ডায়াগ্রামের দিকে নজর দেবেন, দেখবেন মঙ্গল আর বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে এক বিরাট শূন্যস্থান। জার্মান বিজ্ঞানী বোড ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কারের ১০০ বছর আগে দেখেছিলেন যে, একটা গ্রহ থেকে তার পরেরটা কত দূরে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে তার নিয়ম বাধা আছে। তিনি সেই নিয়মটা লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু সেই নিয়ম মতে মঙ্গল ও বৃহস্পতির ফাঁকটা অনেক বড়।
এই গ্যাপ জ্যোতির্বিদদের মনে অশান্তি দিচ্ছিল৷ উনারা এই ফাঁকা জায়গাতে একটা গ্রহ দেখতে চেয়েছিলেন। ১লা জানুয়ারি, ১৮০১ সাল, তারা তাদের এই ইচ্ছা আংশিক ভাবে পূরণে সক্ষম হয়েছিলেন। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ জুসেপ্পে পিয়াজ্জি আকাশে একটি আলোক বস্তু দেখতে পান, যার গতি ছিল আকাংখিত গ্রহটির জন্য একেবারেই নিখুত।
কিন্তু তা দেখতে ছিল একটা সূক্ষ্ম বিন্দুমাত্র। তিনি প্রথমে এটাকে ধুমকেতু ধরে নেয় কিন্তু পরে জানা গেল যে, ওটা ধুমকেতুর নয়। আর এই নতুন বস্তুটিকে গ্রহ ধরে নাম দেওয়া হয় সিরিস। কিন্তু আদৌ-কী এটি কোনো গ্রহ ছিল?
এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা প্রথমে সংশয়ী ছিলেন। এর কিছু বছর পর সেই ফাঁকা জায়গায়, ১৮০২ এইরকম ২য় একটি বস্তুর আবির্ভাব ঘটে, তারপর ১৮০৪ সালে ৩য় ও ১৮০৭ সালে ৪র্থ একই জতের বস্তু দেখা যায়। এ থেকে উনারা নিশ্চিত হলেন যে এটি সৌরজগতের নতুন কোনো শ্রেণির বস্তু। যেহেতু এই বস্তুগুলো সেই সময়ের টেলিস্কোপে ছোট ছোট বিন্দুর মত দেখাতো আর খালি চোখে দেখতে পাওয়া তারাদের মত উজ্জ্বল ছিল, তাই এই নতুন বস্তুটির নাম দেওয়া হয় “অ্যাস্টারয়েডস” (Asteroids), যা গ্রীক শব্দ, এর অর্থ হল তারা-স্বরূপ (Star-like) বা তারা-আকৃতিক (Star-shaped)।
আর বাংলার বলা হয় “গ্রহাণুপুঞ্জ”। ২০ শতাব্দী শুরুর দিকে তারা আরো অনেক গুলো গ্রহাণুর সন্ধান পায় যার আজকের সংখ্যা বিলিয়ন হয়ে দাড়িয়। অনুমান করা হয় আমাদের সৌরজগতে ১ মিলিয়নের মত গ্রহাণু আছে যা ১ কি.মি. থেকে লম্বা আর এদের ব্যাসার্ধ ১০০ মিটার থেকে ১০০ কি.মি. হয়ে থাকে।
তা, কি এই গ্রহাণু? আসলে কোনটা গ্রহাণু আর কোনটা গ্রহাণু নয় তার জন্য কোনো সংজ্ঞার ধরাবাঁধা নেই তবে, সাধারণত গ্রহাণু হল ছোট আকৃতির একধরনের বস্তু যা পাথর বা ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি এবং এরা সূর্য কে প্রদক্ষিণ করে ঘোরে ও এদের সীমানা বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথ পর্যন্ত বিদ্যমান। অবশ্য, যেসব ছোট আকৃতির বস্তু বৃহস্পতির কক্ষপথের বাহিরে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তাদের আলাদা সংজ্ঞা আছে। তবে এ নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করব।
নামকরণঃ
গ্রহাণুদের নাম মূলত দেবিদের নামে হয়ে থাকে যেমন : সেরেস, ভেস্তা, জুনো ইত্যাদি। কিন্তু এদের সংখ্যা এত বেশি হয়ে যায় যে, তা দেবিদের নাম দিয়ে আর কুলানো যায় নি। তাই অনেক নানান রকম কাজ করে করে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের পারমিশন নিয়ে কোনো জ্যোতির্বিদ যে গ্রহাণু আবিষ্কার করে তারা তাদের পছন্দের নাম দেন৷ উনারা নামের সাথে নানা নাম্বার ও দেন। অনেক জ্যোতির্বিদরা তাদের নামের সাথে মিলিয়েও আবিষ্কৃত গ্রহাণুটির নাম রাখেন।
তবে আজকাল নতুন গ্রহাণুদের ক্ষেত্রে একরকম বিশেষ রীতিতে নাম দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে গ্রহাণুটির আবিষ্কারের সাল ও তার সাথে আলফা – নিউমেরিকের ২টি বর্ণ দিয়ে কোড আকারে নামকরণ করা হয়। ১ম বর্ণটা আবিষ্কৃত সালের সেই মাসের ১ম অর্ধেক আর ২য় বর্ণটা সেই মাসে আবিস্কৃত যত নাম্বার গ্রহাণু তার সংখ্যা নির্ধারণ করে। এভাবে নামকরণ করা আপেক্ষিক ভাবে সোজা। যেমন ধরেন ১ম বর্ণ “A” হলে সেটা বুঝাবে জানুয়ারি মাসের ১ম অর্ধেক, “B” থাকলে সেটা বুঝাবে জানুয়ারি মাসের ২য় অর্ধেক। এভাবে ক্রমান্বয়ে ডিসেম্বর মাসের শেষ অর্ধেকে গিয়ে দাড়াবে “Y”।
এখানে যদিও ১২ মাসে ২৪টা বর্ণ হিসেবে ” X ” হবার কথা কিন্তু তা হয়না কারণ, এতে ” I ” কে বাদ দেওয়া হয়। এটি মূলত করা হয় যেন তা “1” এর সাথে মিশে গিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি না করে। আবার ২য় বর্ণ “A” হলে বুঝবেন সেটা উক্ত মাসের ১ম গ্রহাণু, “B” হলে একই মাসের ২য় গ্রহাণু আর এভাবে ক্রমান্বয়ে “Z” পর্যন্ত ২৫ নম্বর গ্রহাণুকে বোঝায়। এখানেও একই কারণের “I” – কে বাদ দেওয়া হয়।
আবার মাঝে মাঝে দেখা যায় একই মাসে ২৫টারও বেশি গ্রহাণু আবিষ্কৃত হয়। তখন ২য় বর্ণের পাশে ২৫টা বর্ণ কতবার পুনরাবৃত্ত হল সেই সংখ্যা থাকে। যেমন যদি ২য় বর্ণ ও তার পাশের সংখ্যা এমন থাকে : “A1″ তাহলে বুঝতে হবে এখানে 1 হল ” ১-২৫ ” পর্যন্ত ১ বার সম্পন্ন হয়ে তার সাথে “A” থাকায় আরো ১ বৃদ্ধি পাওয়া, “B2” হলে ১ বার ঘুরে এসে “B” এরজন্য আরো ২ বৃদ্ধি পাওয়া। অর্থাৎ, শেষে 1 থাকা মানে ১-২৫ একবার শেষ হয়েছে, 2 থাকা মানে দুইবার ১-২৫ শেষ হয়েছে।
সহজভাবে বললে, এই শেষের 1,2 থাকলে ২৫ দিয়ে এদের গুণ দিয়ে এর সামনে যে বর্ণ থাকবে তার ক্রমিকনম্বর যোগ করে দিলেই হয়। যেমন : শেষে “B3” হলে ২৫ কে ৩ দিয়ে গুণ দিয়ে প্রাপ্ত গুণফলের সাথে “B” এর ক্রমিক নম্বর ২ যোগ করে দিলেই গ্রহাণুটির সংখ্যা পেয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তা হবে : (২৫*৩)+২ = ৭৭।
এখন কিছু সরাসরি উদাহরণে যাওয়া যাক। যদি কোনো গ্রহাণুর নাম “2015 AA” হয় তাহলে বুঝতে হবে যে, এটা ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের ১ম অর্ধেকের ভেতর আবিষ্কৃত ১ম গ্রহাণু। আবার, “1950 FC1” হলে বুঝতে হবে যে, এটি ১৯৫০ সালের মার্চের ২য় অর্ধেকে আবিষ্কৃত ২৮তম গ্রহাণু। এবার একটা শেষ উদাহরণ দেই, “1992 QB1” থাকলে কি হবে? উত্তর হবে ১৯৯২ সালের আগষ্ট মাসের ২য় অর্ধেকে আবিষ্কৃত ২৭ তম গ্রহাণু। এটা না বুঝলে উপরের ২টা প্যারা আবার পড়েন।
আর বুঝে থাকলে “1998 RE1” টা নিজে ভাবুন। এরপর এই নতুন গ্রহাণুটা যে আসলেই গ্রহাণু তা নিশ্চিত হবার পর একে অফিশিয়াল নম্বার দেওয়া হয়। এখানে বিশেষ করে যত নম্বরে আবিষ্কার করা হয় সেটি দেওয়া থাকে। যেমন 2015 AA গ্রহাণুটি ১৯৭৮৪৫ নং আবিস্কৃত গ্রহাণু হলে এটাই এর অফিশিয়াল নম্বার। একে তখন এভাবেও লিখা যেতে পারে, 197845 (2015 AA) বা (197845) 2015 AA।
যাহোক আজকাল বিখ্যাত ব্যক্তি বা জনপ্রিয় চরিত্রের নামেও গ্রহাণূদের নাম দেওয়া হয়। যেমন : (2309) Mr. Spock , (9007) James Bond ইত্যাদি। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে নামকরণে কিছু লিমিট থাকে। যেমন: বৃহস্পতির ট্রোজান গ্রহাণু (যা নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করব) এদের নাম গ্রিকদের ট্রোজান যুদ্ধের হিরোদের নামেই নাম দিতে হবে।
কোথা হতে এলোঃ
আমাদের সৌরজগৎ যখন তৈরি হচ্ছিল, আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘের কেন্দ্রের আশেপাশের অন্য অংশ হতে বেশি ঘনত্বপূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে খুব দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে। সেখানে তৈরি হয় আমাদের প্রোটোসূর্য তার পর সেখানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং দৃশ্যমান আলোর দেখা মেলে। তাপমাত্রা আরও অনেক বাড়ার পর শুরু হয় নিউক্লিয় বিক্রিয়া, সৃষ্টি হয় আমাদের পরিপূর্ণ সূর্য যা মেঘটির কেন্দ্রের স্থান দখল করে নেয়।
এরপর আশেপাশের সকল বস্তু চাকতির ন্যায় আকৃতি ধারণ করতে শুরু করে। আশেপাশের সকল বস্তু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে শুরু করে। আর সেখান থেকে তৈরি হয় গ্রহ। গ্রহ তৈরি হবার সময় এরা মেঘ থেকে অনেক বেশি উপাদান আকর্ষণ করে নিতে শুরু করে।
স্বল্প ভর থেকে অধিক ভর যুক্ত হতে থাকে, সেই সাথে আকারও বাড়াতে থাকে। আমাদের রক্ষক মানে বড় ভাই বৃহস্পতি তার আশেপাশের অধিকাংশ উপাদান আকর্ষণ করে নেয় তবে সবটুকু নয়। যেগুলো বাকি থাকে তারা ভারী উপাদান গুলো মাঝে টেনে নেয় আর হালকা উপাদান গুলো উপরের স্তরে আকর্ষিত হতে থাকে মানে তারাও গ্রহ হবার চেষ্টা চালায়।
গ্রহ হবার শর্তগুলো মোটামুটি ভাবে পূর্ণ হয়েছিল, কিন্তু পুরোপুরি নয়। তাই গ্রহটি গঠিত হতে পারেনি বা হয়েও স্থিরতালাভ করেনি৷ কোনো কারণে তারা মহাকাশে অজ্ঞাত বিপর্যয়ের ফলে ভেঙে হাজারো খণ্ড হয়ে যায়, সেই সম্ভাব্য বা বিনষ্ট গ্রহের দেহবস্তুই ছোট ছোট টুকরো হয়ে ওখানে ছড়িয়ে আছে, আর সূর্যকে পরিক্রমণ করছে। তাই আমরা এ গ্রহাণু বেষ্টনি দেখি।
এসব গ্রহাণুদের কিছু হচ্ছে গ্রহ গঠনের সেই ঘন কোর বা মাঝের অংশ থেকে আর কিছু তার ওপরের হাল্কা অংশে থেকে, তাই এদের উপাদানে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। আবার অনেকের ধারণা, গ্রহগূলির জন্মের সময় যে সব অতি ক্ষুদ্র বস্তুর সৃষ্টি হয়েছিল, হয়ত তারা কোনও কারণে জমাট বেধে বিরাট গ্রহে রূপান্তরিত হতে ব্যার্থ হয়। কিন্তু এই ভাঙাচোরা গ্রহাণুগুলি সূয্যিমামা-কে অন্যান্য ভাগ্নের (গ্রহের) মতোই প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে দিয়েছিল। এদেরকে ব্যার্থ গ্রহও বলা হয়।
এরা আবার “Minor planet” অথবা “Planetoid” গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত। ধারণা করা হয় যে, বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে আরো অনেক গ্রহাণু ছিল। কিন্তু সে গুলো হয় আমাদের বড় ভাই খেয়ে ফেলেছেন না হয় তার ক্ষমতা দেখাবার জন্য মধ্যাকর্ষণ দিয়ে তাদের কক্ষপথ পরিবর্তনের মাধ্যমে জোর করে বের করে দেন। অবশ্য এর ফলেই হতো মঙ্গল গ্রহের আকার ছোট। কারণ মঙ্গল গ্রহ খেয়ে বেড়েওঠার সময়, বড় ভাই বৃহস্পতি তার খাদ্য মেরে দিয়েছেন।
উপাদান ও আকারঃ
গ্রহাণুদের আকার বেশ উদ্ভট। কেউ গোল, তো কেউ তে-কোণা, কেউবা একেবারে লম্বা। বড় আর ভারী গ্রহাণু গুলো মোটামুটি গোলাকার, কিন্তু ছোট গুলো বেশি অনিয়মিত আকৃতির হয়। বিজ্ঞানীরা এদের আকার, এরা কতটুকু সূর্যের আলোর প্রতিফলন ঘটায় ও কতটুকু তাপ বিচ্ছুরিত করে তার উপর ভিত্তি করে বের করেন।
আপনার যদি গ্রহাণুদের খেতে ইচ্ছে হয় তাহলে খেয়ে দেখতে পারেন। এরা নানান ফ্লেভারের হয়। অবশ্য যেহেতু চকলেট ফ্লেভার নেই তাই না খাওয়াই উত্তম। যাহোক, এদের উপাদানের বৈশিষ্ট বিচারে প্রধানত ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: C-type, S-type এবং M-type. তবে আরো অধিক বৈশিষ্ট্য বিচারে এদের নানান উপ-পর্বেও ভাগ করা হয়।
বেশিরভাগ , প্রায় ৭৫ % গ্রহাণু কার্বন দিয়ে তৈরি, এরা হল সি-টাইপ (C-type) বা কার্বনেশাস। এরা কালচে বর্ণের। তবে এদের প্রকৃত সংখ্যা বের করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এর মূল কারণ, এরা বেশ কালচে। কালো হওয়ায় এরা খুব কম আলোর প্রতিফলন ঘটায়, তাই সবকয়টাকে দেখা খুবই মুশকিল।
প্রতিফলনের ব্যাপারটা বিজ্ঞানীগণ “Albedo” নামের এক প্রক্রিয়ায় নির্ধারণ করে থাকেন। কোনো বস্তুর পৃষ্ঠে যে পরিমাণ আলো পরে তার যে পরিমাণ শোষিত না হয়ে প্রতিফলিত হয় তাকে আলবেদো বলে। যদি কোনো বস্তুর পৃষ্ঠে আলো শোষিত না হয়ে সবটাই প্রতিফলিত হয় আসে তাহলে তার আলবেদো ১, আর যদি কোনো বস্তুর পৃষ্ঠে আলো প্রতিফলিত হয়ে ফিরে না আশে তাহলে তার আলবেদো ০ হয়।
এই সি-টাইপ গ্রহাণুদের আলবেদো (০.০৩ – ০.০৯) এর মধ্যে পরে। বুঝতেই পারছেন এরা কতটা কালচে। অবশ্য এরচেয়েও কালচে একপ্রকার গ্রহাণু আছে যারা সি-টাইপ দের মতোই। এদের আগে RD-type বলা হলেও এখন এদের ডি-টাইপ (D-type) বলা হয়।
এরপর আবার, ১৭% গ্রহাণু বেশিরভাগই সিলিকন বা দস্তার তৈরি এদের বলে এস-টাইপ (S-type) বা সিলিকেশাস৷ এরা তুলনামূলক ভালোই উজ্জ্বল এদের আলবেদো (০.১০-০.২২) হয়ে থাকে। এদের বেশিরভাগই থাকে প্রধান বেষ্টনির মধ্যভাগে। প্রকৃতিতে এরা ধাতব ধর্মের। এদের গঠনে আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট থাকে।
আর বাকী ৮% হল এম-টাইপ (M-type) বা মিসসেলেনিয়াস (Miscellaneous) এরা অন্যান্য মেটাল পদার্থের তৈরি তবে এদের মধ্যে লোহার আধিক্য বেশি। এদের আলবেদো (০.১০ – ০.১৮)।
এই টাইপের গ্রহাণু, সি-টাইপ ও এস-টাইপ গ্রহাণুর সাথে বেশ অমিল। বলা যায়, যেসব গ্রহাণুকে সি ও এস এ স্থান দেওয়া যাচ্ছে না তাদেরকে এম-টাইপ এ স্থান দেওয়া হয়৷ আবশ্য অনেকে ধারণা করেন যে গ্রহটি ভেঙে গ্রহাণু হয়েছে, তার কোরের উপাদান দিয়ে এম-টাইপ গ্রহাণুর জন্ম। এদেরকে “উড়ন্ত খনি” বলা যায়, এ টাইপের ১ মাইল চওড়া গ্রহাণুতে এত পরিমাণ খনিজ সম্পদ থাকতে পারে যে, এদের মূল্য বর্তমান হিসেবে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
লিখাঃহৃদয় হক