এই মুহূর্তে বিলিনিয়াদের মধ্যে একটা লড়াই চলছে । কে প্রথম স্পেইসে যাবে । আমাজন বস নাকি ভার্জিনের বস । ইলোন মাস্ক নাকি গোপনে গোপনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন ফেসবুকের মালিক । লাইনে আরো কিছু বিলিয়নিয়ার আছে ।
আমাজন বিরোধী একদল জিগির ঢুকেছে আমাজনের বস জেফ-কে যেন স্পেসে ফেলে আসা হয়, পৃথিবীতে না আনে । কারণ, লোকটি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া ট্রাম্পের মতো আরেক বদমাইশ । যাইহোক, গল্প সেটা নয় । স্পেসে যাওয়া এতো সোজা নয় । কিছু ঝুঁকি আছে, স্পেসে গেলে যেগুলো মানুষের শরীরে প্রতিক্রিয়া তৈরী হয় । তার কয়েকটি উদাহরণ দেই ।
স্পেসে গেলে আমাদের মস্তিষ্কের কিছু পরিবর্তন হয় ভিতরে । এই পরিবর্তনে অনেকগুলো ক্ষতির মধ্যে একটি হচ্ছে চোখ । আমরা চোখ দিয়ে যা দেখি তা বুঝতে পারি মস্তিষ্কের একটা অংশের মাধ্যমে । মাথার পেছনে ঘাড়ের উপরে এই চোখ নিয়ন্ত্রণের অংশটি থাকে । এইজন্যে মাথার পেছনে কখনো যন্ত্রনা করলে একটি কারণ হিসাবে চোখের কোনো সমস্যার কারণে হচ্ছে ধরে নিতে পারেন ।
তো স্পেসে গেলে এস্ট্রোনাটরা চোখে কিছুটা ঘোলাটে দেখেন । এই নিয়েই তাদের কাজ করতে হয় । মিশন শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসলেও এই সমস্যা অনেকের অনেকদিন যায় না । আস্তে আস্তে গেলেও বছর খানেকের উপরে লাগে ।
স্পেসে গেলে হাতের আঙুলের নখ গুলো খসে যেতে পারে । তাই এস্ট্রোনাটরা একনাগাড়ে বেশিক্ষন হাতে কাজ করেন না ।
স্পেসে গেলে শরীরের উচ্চতা গড়ে দুই ইঞ্চি বেড়ে যায় । কারণ তখন গ্রাভিটি কাজ করে না শরীরের উপর । পৃথিবীতে যখন আমরা থাকি, গ্রাভিটি আমাদেরকে টেনে নিচের দিকে ধরে রাখে ।
ভবিষ্যতে স্পেস সুট ওয়ালা সস্তার এমন কাপড় বের হবে যেটার ভেতর থাকলে আপনার শরীরে এমন জিরো গ্রাভিটি তৈরী হবে, যা পরলে দুই তিন ইঞ্চি লম্বা হয়ে যাবেন মুহূর্তে । কথা আছে – মেয়েরা বয়স লুকায়, ছেলেরা হাইট লুকায় ! বেঁটে ছেলেদের একটু গতি হবে ! 😄😄
স্পেসে গেলে সহজে মাথা ব্যাথা করে, বমির ভাব হয়, শরীর কোনো কারণ ছাড়াই দুর্বল লাগে প্রথম কিছুদিন । পরে ঠিক হয়ে যায় ।
স্পেসে খুব ঘন ঘন পেশাব ধরে । এইজন্যে দেখা যায় – এস্ট্রোনাটরা স্পেস শাটলে উঠার শেষ মুহূর্তে একবার পেশাব করে নেয় !
দেখা যাক, বিলিওনিয়াররা কে এইসব সামলাইয়া যেতে পারে ! পকেট টাকা চিনে, শরীর তো আর টাকা চেনে না !
© অপূর্ব চৌধুরী । চিকিৎসক, কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান লেখক