মাতৃভাষা বাংলায় আবহাওয়া বিজ্ঞান চর্চা (পর্ব ১৪): ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি নামক স্হানে পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে কেন?
ভারতের মেঘালয় মালভূমি বা মেঘালয় প্লাটিউ বাংলাদেশের জন্য ব্যাপক আশীর্বাদ বলা চলে। এই মালভূমিটি না থাকলে সিলেট ও কিশোরগঞ্জের হাওর বা ভাটি অন্বল থাকতো না। এই মালভূমির ঢাল বয়ে জলিয় বাষ্প উপরে উঠে যায় প্রায় ৩ দিক থেকে (দক্ষিণের হওর এলাকা থেকে, পশ্চিমের তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র থেকে ও উত্তরের ব্রহ্মপুত্র থেকে)।
সকালে সূর্য উঠার পরে মালভূমির উপরের অংশের বাতাস গরম হয়ে হালকা হয়ে আকাশে উঠে যায় ফলে ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন স্থানে বায়ু শূন্যটা সৃষ্টি হয়। প্রকৃতি যেহেতু শূন্য স্থান পছন্দ করে না তাই আশ-পাশের বায়ু পাহাড়ের ঢাল বেয়ে মালভূমির ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন সেই বায়ু শূন্য স্থান দখল করে। এই প্রক্রিয়া সারাদিন চলতে থেকে ও মেঘালয় পর্বতের উপর মেঘের পরিমাণ বাড়তে থাকে। যখন মেঘ জলিয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে যায় তখন তা বৃষ্টি আকারে ভূমিতে পতিত হয়।
মেঘালয় পর্বতের উপর জলিয় বাষ্পের এই সরবরাহ প্রায় সারাবছর চালু থাকে যেহেতু সিলেটের হওয় এলাকায় বছরের প্রায় ৮-৯ মাসই পানিতে ঢুকে থাকে ও তিস্তা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানির প্রবাহ অব্যাহত থাকে। ঠিক এই কারণে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে সরা পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
সংযুক্ত ছবিটিতে আজ সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত মেঘালয় পর্বতের উপরে মেঘ সৃষ্টির চিত্র দেখা যাচ্ছে।