পর্ব-৪৬:প্রাকৃতিক নির্বাচন – ফিরে দেখা(২)
Negative Selection এর বিপরীতে আছে Balancing Selection.
নেগেটিভ সিলেকশন যেমন জেনেটিক ডাইভার্সিটি কমায়, ব্যাল্যান্সিং সিলেকশন জেনেটিক ডাইভার্সিটি রক্ষা করে।ব্যাল্যান্সিং সিলেকশন মূলত কয়েকটা প্রসেস হয়, কয়েকটা পদ্ধতিতে হয়, যার দ্বারা জিন পুলে একই জিনের একাধিক এলিলের অস্তিত্ব বজায় থাকে।ফলে প্রজাতিতে জেনেটিক পলিমর্ফিজম রক্ষা হয়। পলিমর্ফিজম বলতে বোঝায় একই ট্রেইটের একাধিক (poly) রূপ (morph).
Panmictic Population এ ব্যাল্যান্সিং সিলেকশনের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। প্যানমিক্টিক পপুলেশন বলতে বোঝায় যেই জনসংখ্যায় প্রজননের ক্ষেত্রে দলাদলি থাকেনা, মানে কোনো প্রাণিই কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বিপরীত লিঙ্গকে প্রিফার করে না। বিপরীত লিঙ্গ হলেই হলো, লম্বা-খাটো, ধনী-গরিব ডাজন্ট ম্যাটার। সহজ কথায় যেখানে Random mating ঘটে। আর র্যান্ডম মেটিং কে বলে Panmixia.
ব্যাল্যান্সিং সিলেকশনের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ দুইটা প্রসেস হলো Heterozygote Advantage আর Frequency-dependent Selection.
আজ আলোচনা করবো Heterozygote Advantage নিয়ে।
হেটেরোজাইগোট মানে ডমিনেন্ট এলিল আর রিসেসিভ এলিলের জোড়া। যখন হেটেরোজাইগোট হওয়ার ফলে হোমোজাইগোটদের থেকে বেশি ফিটনেস পাওয়া যায় বা বেশি সুবিধা পাওয়া যায়, তখন তাকে বলে হেটেরোজাইগোট এডভান্টেজ।আর একটামাত্র নির্দিষ্ট Locus ( ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট স্থানে একটা জিন থাকে তাকে লোকাস বলে) এর ফলে যখন হেটেরোজাইগোট এডভান্টেজ পাওয়া যায়, তখন তাকে বলে Overdominance. মানে এক্ষেত্রে হেটেরোজাইগোট হওয়ার ফলে যে ট্রেইট প্রকাশ পায় তা হোমোজাইগোটের চেয়েও বেশি তীব্র আর সুবিধাজনক।
যদি পপুলেশনে হেটেরোজাইগোট এডভান্টেজ থাকে, তবে ডমিনেন্ট আর রিসেসিভ, দুইটা এলিলই টিকে যাবে । ফলে প্রজননের সময় সন্তান হোমোজাইগাস রিসেসিভ বা ডমিনেন্ট হতে পারবে, এভাবে পপুলেশনে জিন ভ্যারিয়েশন রক্ষা পাবে।
একটা বিশেষ ক্ষেত্র হলো যখন হেটেরোজাইগটরা একইসাথে সুবিধা-অসুবিধা বহন করে, কিন্তু হোমোজাইগটরা শুধুমাত্র অসুবিধাই বহন করে। ফলে প্রকৃতি হেটেরোজাইগোট নির্বাচন করে। কারণ “নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো”।
অনেকে মনে করেন যে একেবারে চরম সুবিধা না পেলে কোনো ট্রেইটই সিলেক্টেড হয় না, কিন্তু তা ভুল ধারণা। শুধুমাত্র অসুবিধার চেয়ে সুবিধা-অসুবিধার মিশ্রণ ভালো নয় কি? এর একটা চমৎকার উদাহরণ না দিলেই নয় , তা হলো Sickle Cell Anaemia,(SCA)
SCA হলো একটা জেনেটিক ডিজঅর্ডার।দুইটা Incomplete recessive allele থাকলে, মানে হোমোজাইগাস রিসেসিভ হলে, এই সমস্যা দেখা যায়।Incomplete মানে এক্ষেত্রে রিসেসিভ এলিলগুলো সম্পূর্ণ না বা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হতে পারে না। এই রোগে আক্রান্তরা যখন কম অক্সিজেনযুক্ত পরিবেশে যায়, তখন তাদের লোহিত রক্তকণিকা স্বাভাবিক দ্বিঅবতল আকৃতি ছেড়ে কাস্তের মতো অবতলোত্তল আকৃতি ধারণ করে।
এমন আকৃতির ফলে তারা সরু রক্তবাহিকায় আটকে যায়, আর বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেনের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করে।ফলে ধীরে ধীরে তারা নানান সমস্যায় আক্রান্ত হয় আর অকালমৃত্যুবরণ করে।
তবে একমাত্র হোমোজাইগাস রিসেসিভ হলেই এই রোগের চরম রূপ প্রকাশ পায়। কারণ এটা অসম্পুর্ণভাবে রিসেসিভ। যদি কেউ হেটেরোজাইগট হয়,মানে তার একটা এলিল এই অসম্পূর্ণ রিসেসিভ, রোগ সৃষ্টিকারী, আর আরেকটা এলিল স্বাভাবিক সুস্থ ডমিনেন্ট, তাহলে তার মধ্যে একধনের মিশ্র ফিনটাইপ প্রকাশিত হবে।তার কিছু লোহিত রক্তকণিকা এই সমস্যায় ভুগবে, কিন্তু তার মাত্রা এতই কম যে তার ওপর স্পষ্ট কোনো প্রভাব পড়বে না।
তবুও এটা ক্ষতিকর, তাই স্বাভাবিক জ্ঞানে আমাদের আশা করা উচিত যে এই ট্রেইটটা ন্যাচারাল সিলেকশনের প্রভাবে একসময় বিলুপ্ত হবে। কিন্তু তা হয়নি বা হও্যার লক্ষণও নেই। কেন ?
দেখা গেল কি, যেসব এলাকায় ম্যাল্যারিয়ার প্রকোপ মারাত্মক, বিশেষ করে আফ্রিকা অঞ্চলে, সেখানে এই হেটেরোজাইগাসরা বিশেষ একটা সুবিধা পাচ্ছে। কীভাবে?
ম্যাল্যারিয়ার জীবাণু এর জীবনকালের নির্দিষ্ট একটা সময় কাটায় লোহিত রক্তকণিকার ওপর। আর সেখানে থাকার সময় এটা সেই কণিকার অক্সিজেন লেভেল যথেষ্ট পরিমাণে কমিয়ে দেয়। যখনই কমিয়ে দেয়, তখনই কণিকাগুলো অবতলোত্তল আকৃতি ধারণ কর্ মানে সিকল সেল ডিজিজ প্রকাশিত হয়।
আর যেহেতু হেটেরোজাইগাসদের মধ্যে এই রোগ নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় থাকে, তাই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সজাগ হয় আর রক্ত সংবহন তন্ত্র থেকে এই বিকৃত কণিকাগুলোকে বিতাড়িত করে। এদের বিতাড়িত হবার সাথে সাথে এদের মধ্যে থাকা ম্যালেরিয়ার জীবাণুও বিতাড়িত হয়, ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তি বেচে যায়।
যারা সিকল সেলের চরম রূপে আক্রান্ত, মানে হোমোজাইগাস রিসেসিভ, তারাও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করে, কিন্তু সিকল সেলই একদিন তাদের মেরে ফেলে। আর যাদের সিকল সেলের এলিল নেই,মানে হোমোজাইগাস ডমিনেন্ট, তারা ম্যালেরিয়ায় মারা যায়।
তাই অদ্ভুত ধরনের সুবিধা পায় হেটেরোজাইগাসরা, তারাই বেঁচে থাকে, তারাই নিজের হেটেরোজাইগোসিটি পরবর্তী প্রজন্মে পাস করে আর ফলে প্রজাতিতে বা পপুলেশনে হেটেরোজাইগাস এডভান্টেজ দেখা যায়।ফলে হোমোজাইগাস ডমিনেন্ট আর রিসেসিভ, উভয় ধরনের প্রাণিই জন্ম নেই আর জিন ভ্যারিয়েশন রক্ষা পায়। ফলে ঘটে ব্যাল্যান্সিং সিলেকশন।
এই ছিলো আমাদের হেটেরোজাইগাস এডভা্নটেজের গল্প। আগামী পর্বে আলোচনা করবো ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন নিয়ে।
পর্ব-৪৭:প্রাকৃতিক নির্বাচন – ফিরে দেখা(৩)
Balancing Selection এর আরেকটা মেকানিজম হলো Frequency depenent selection.
এক্ষেত্রে কোনো বৈশিষ্ট্যের ফিটনেস, মানে কোনো জিনটাইপ বা ফিনোটাইপের ফিটনেস নির্ভর করে কোনো জনসংখ্যায় সেই ট্রেইটের সংযুতি দেখে। সংজ্ঞাটা মনে হয় একটু কঠিন। এর শ্রেণিবিভাগ নিয়ে আলোচনা করলে বুঝতে পারবেন ভালো ভাবে। ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন দুই প্রকার । পজিটিভ আর নেগেটিভ।
পজিটিভ ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশনে একটা ট্রেইট যত বেশি কমন হয়, মানে যত বেশি প্রাণি সেই ট্রেইটের অধিকারী হয়, ট্রেইটটা তত বেশি সুবিধাজনক হয়, মানে এর ফিটনেস বেশি হয়। আর নেগেটিভ ঠিক উলটো, যত বেশি কমন হবে, তত বেশি ক্ষতিকর হবে, তত বেশি ফিটনেস কমবে।
এবার আশা করি প্রথমে যে সংজ্ঞা দিয়েছি তার অর্থ বুঝেছেন। বলতে পারেন অনেকটা গণতান্ত্রিক সিলেকশন। পজেটিভে যেটা যত বেশি হবে সেটা তত ভালো, আর নেগেটিভে যেটা যত বেশি হবে, সেটা তত খারাপ। ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন তখন হয়, যখন কোনো নির্দিষ্ট প্রাণির ফিটনেস তার প্রজাতির বাকি সব প্রাণির সামষ্টিক ফিটনেসের ওপর নির্ভর করে। আর প্রাণির ফিটনেস মানেই তার মধ্যকার ট্রেইট,জিনটাইপ, ফিনটাইপের ফিটনেস।
পজিটিভ ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন হলে কমন ট্রেইটগুলো টিকে যায়, আনকমন বা নতুন গুলো বিলুপ্ত হয়। নেগেটিভ ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন হলে কমন গুলো বিলুপ্ত হয়, আনকমন বা নতুন গুলো টিকে যায়। ফলে উভয় ক্ষেত্রেই ভিন্নভাবে জিন বৈচিত্র রক্ষা হয়।
ফ্রিকুয়েন্সি ডিপেন্ডেন্ট সিলেকশন নিয়ে এইটুকুই বলার ছিল। সাথে সাথে আমাদের ব্যাল্যান্সিং সিলেকশন নিয়েও আলোচনা শেষ।মানে জেনেটিক ডাইভার্সিটির ওপর নির্ভর করে বিবর্তনের শ্রেণিবিভাগ কীভাবে হয় তা জানাও শেষ।
Life cycle stage বা জীবনচক্রের ধাপের ওপর ভিত্তি করেও সিলেকশন হতে পারে। মানে এক্ষেত্রে কোনো প্রাণিকে জীবনের একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখতে সিলেকশন ঘটে। এটা প্রধানত দুই প্রকার।
Viability/Survival Selection, এখানে সিলেকশঙ্কাজ করে একটা প্রাণির টিকে থাকা নিশ্চিত করতে। টিকে থাকতে বা বেঁচে থাকতে যাবতীয় যা কিছু দরকার, তা ও এর আওতায় আসবে। অর্থাৎ এখানে বাকি সব থেকে নিজের অস্তিত্ব রক্ষাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর আছে Fecundity/Feretility/Reproductive Selection , এখানে সিলেকশন ঘটে কোনো প্রাণি যাতে প্রজনন করা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, তার জন্য।তবে সার্ভাইভাল নিশ্চিত না হলে নিশ্চই প্রজননও সম্ভব হবে না । এক্ষেত্রে অন্য যেকোনো কিছু থেকে নিজের জিন পরবর্তী প্রজন্মে পাস করাটাই মুখ্য হয়ে ওঠে।
Unit of selection বা সিলেকশনের এককের ওপর নির্ভর করে রাকৃতিক নির্বাচন কয়েক প্রকার হতে পারে। সিলেকশনের একক বলতে কী বোঝায়? এটা দ্বারা বোঝায় কোন পর্যায়ে সিলেকশন হচ্ছে। সিলেকশন কি কোনো নির্দিষ্ট জিনের হচ্ছে, নাকি কোনো একটা আস্ত প্রাণির হচ্ছে, নাকি কোনো ফিনটাইপের হচ্ছে যা কয়েকজন নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিদ্যমান, নাকি আস্ত একটা দলের বা গ্রুপের সিলেকশন হচ্ছে।
এগুলোই সিলেকশনের একক। এটা আসলে বিজ্ঞানীদের মধ্যে একটা তর্কের বিষয়, যে কোন স্তরে সিলেকশন ঘটে বা কোন এককে সিলেকশন ঘটে।
সবার আগেই আসে, Selfish Gene Theory. প্রায় সবাই এই সেলফিস জিন নামটার সঙ্গে পরিচিত, রিচার্ড ডকিন্স এর বিখ্যাত বই। সেটা আসলে লেখা Gene Centered View of Evolution নিয়ে। মানে তিনি মনে করেন যে সিলেকশন মূলত ঘটে জিন স্তরে।এই মতবাদ অনুসারে, যেই এলিলের প্রকাশিত ফিনোটাইপ কোনো প্রাণির ফিটনেস বাড়িয়ে তাকে সিলেক্টেড করে, সেই এলিল অন্যান্য এলিলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে যায়, ফলে প্রত্যেক সেই এলিলধারী প্রাণিও টিকে যায়, আর এভাবেই জিন সিলেকশনের মাধ্যমে বিবর্তন এগিয়ে চলে।
ফিনটাইপ হলো একটা জিন আর তাকে ধারণকারী প্রাণির আশেপাশের পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফল, এটা ক্ষণস্থায়ী, ফিনটাইপ কখনো ডুপ্লিকেটেড হয়না, হয় জিন। তাই এই মতবাদ জিনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দান করে।
এরপর আছে Kin Selection , Kin মানে নিকটাত্মীয়।এখানে একটা প্রাণি নিজের চেয়ে বেশি নিজের আত্মীয়দের নিয়ে চিন্তা করে, প্রয়োজনে নিজের সার্ভাইভাল আর রিপ্রোডাকশনের বিনিময়ে আত্ম্যীয়দের রক্ষা করে। এটা একপ্রকার Altruistic Behaviour. এমন কেন করে ? কারণ তার নিজের জিনের একটা অংশ তার আত্মীয়দের মধ্যে রয়ে গেছে। তাই যদি সে নিজের একার জায়গায় তার আত্মীয়দের বেশি গুরুত্ব দেয়, তবে তার জিনগুলোর সার্ভাইভ করার রেট অনেক বেশি হবে।
কারণ সে একা, আর আত্মীয় অনেক। এভাবে যে সিলেকশন ঘটে তাকেই বলে Kin Selection, নিকটাত্মীয়দের নিয়ে যে সিলেকশন হয়।
এখানে লক্ষণীয় যে, কিন সিলেকশনেও কিন্তু জিনের টিকে থাকার ওপরই জোড় দেয়া হচ্ছে, তাই কিন সিলেকশনের মতবাদ অনেকাংশেই জিন সিলেকশন থেকে ডিরাইভকৃত।
সর্বশেষে Group Selection. এই মতবাদে বলা হয় যে সিলেকশন কাজ করে গ্রুপের ওপর। গ্রুপের বিবর্তন ইন্ডিভিজুয়াল প্রাণিকে প্রভাবিত করে। যেমন- একই প্রজাতির দুটো গ্রুপ , এদের এক দলের মধ্যে সামাজিকতা বেশি, মানে এরা দলের ফিটনেস রক্ষার প্রতি সচেতন। অন্য দলের মধ্যে এই গুণটা নেই। তখন যেই দলটা সামাজিক, তারা টিকবে।
এখন সেই দলের মধ্যের একেকটা প্রাণির যেই ভালো-খারাপ ট্রেইটই থাক না কেন, তাদের পুরো দলের সিলেকশনই হয়ে গিয়েছে। এটাই গ্রুপ সিলেকশন।
বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনো এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলমান যে কোন স্তরে আসলেই সিলেকশন ঘটে।
সর্বশেষে , মনে আছে সেক্সুয়াল সিলেকশনের কথা? ওটাও কিন্তু ন্যাচারাল সিলেকশন, তবে কোন রিসোর্স নিয়ে সিলেকশন হচ্ছে তা অনুযায়ী। সেক্সুয়াল সিলেকশনেরক্ষেত্রে রিসোর্সটা হচ্ছে প্রজনন।
এই ছিলো আমাদের ন্যাচারাল সিলেকশন নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা।তবে আরো দুয়েক ধরনের সিলেকশন আছে,তারাও প্রাকৃতিক নির্বাচন। তবে তাদেরকে সাধারণত কোনো কিছুর ওপর ভিত্তি করে ন্যাচারাল সিলেকশনের প্রকার হিসেবে দেখানো যায়না। তা নিয়ে আগামী পর্বে আলোচনা করবো।
পর্ব-৪৮:অন্যান্য নির্বাচন
আমরা ন্যাচারাল সিলেকশনের আরেকটু বিস্তারিত আলচনা গতপর্বে শেষ করেছি। আজ সিলেকশনের বাকি দুয়েক প্রকার নিয়ে আলোচনা করবো।
ধরুন, পৃথিবীর কোনো একটা জায়গায় বছরের ৬ মাস শীত থাকে, প্রচণ্ড শীত, তুষারপাত হয়। আর বাকি ৬ মাস গরম থাকে। সেখানে একটা খরগোশের প্রজাতি বাস করে। এই খরগোশের প্রজাতিতে দুই ধরনের খরগোশ আছে, একটা আছে ঘন লোমশ খরগোশ, আরেকটা আছে একটু কম লোমশ খরগোশ। যখন শীতকাল আসে, প্রচণ্ড শীতে ঘন লোমশ খরগোশদেরকে দেহে তাপ উৎপাদনে কম শক্তি ব্যয় করতে হয়। কারণ তাদের ঘন লোম দেহতাপ আটকে রেখে দেহকে গরম রাখে।
ফলে বেঁচে যাও্যা শক্তি তারা অন্য কাজে ব্যবহার করে। এ সময় কম লোমশ খরগোশুদের আবার বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয় তাপ উৎপাদনে, ফলে তাদের অন্যান্য কাজ করতে একটু অসুবিধা হয়। মানে শীতকালে বেনিফিট পায় ঘন লোমশ খরগোশগুলো, বা সিলেকশন প্রেশার তাদের দিকে কাজ করে।
গরমকালে কী হয়? ঘন লোমশ খরগোশগুলো সহজেই ক্লান্ত হয়ে যায়, একেতো গরমকাল, আবার ঘন লোম। কিন্তু সুবিধা পায় কম লোমশ খরগোশগুলো। মানে তাদের দিকে সিলেকশন হয়।
এখানে এই সিলেকশনের সময় কম বলে কোনো নির্দিষ্ট ধরনের লোমশ খরগোশেরই চিরস্থায়ী সিলেকশন হতে পারছে না।শীতের ৬ মাসের মধ্যে নিশ্চই সব কম লোমশ খরগোশ মারা জাবে না, গরমের ৬ মাসেও নিশ্চই সব বেশি লোমশ খরগোষ মারা যাবেনা। ফলে তারা উভয়েই টিকে আছে, কিন্তু বছরের দুইটা সময়ে তাদের ফ্রিকোয়েন্সি দুই রকম থাকে, ফ্রিকোয়েন্সি ওঠা-নামা করে। শীতকালে ঘন লোমশপদের ফ্রিকোয়ন্সি বেড়ে যায়, কম লোমশদের কমে যায়।
আবার গরমকালে হয় ঠিক উলটো। এটার গ্রাফ আকলে কেমন দেখাবে তা নিচের ছবি থেকে দেখে নিন।
এইযে ফ্রিকোয়েন্সির ওঠা-নামা করা বা Fluctuate করা, এটা হয় যে সিলেকশনের কারণে তাকে বলে Fluctuating Selection. সিলেকশনের সময় কম হবার ফলে আর পরিবেশের পুনরাবৃত্তির ফলে কোনো এলিলই ফিক্স হতে পারে না,সবগুলোই টিকে থাকে, ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যায়। প্রকৃতিতে এই সিলেকশন অহরহ দেখা যায়।
এবার, আবারও ধরুন, এক জঙ্গলে বাঘ আর হরিণ আছে। বাঘ শিকার করবে হরিণকে। এবার দেখা গেলো যে মিউটেশনের ফলে একটু ভিন্ন দেখতে হরিণের আবির্ভাব হলো। হতে পারে তাদের গায়ের রঙ আলাদা। বাঘ, তার বাপ, তারও বাপ, বাঘের চৌদ্দ পুরুষ শিকার করে এসেছে এক ধরনের হরিণ। তাদের স্মৃতিতে এই এক ধরনের হরিণ গাঁথা, এবার যদি নতুন ধরনের হরিণ আসে, যাদেরকে দেখতে আগের হরিণদের চেয়ে যথেষ্ট আলাদা, তখন বাঘ আর এই নতুন হরিণকে শিকার করতে চাইবে না। এই নতুন হরিণদের শিকার হবার প্রবণতা কমে জাবে, সার্ভাইভাল রেট বেড়ে যাবে ।সহজ কথায় তাদের দিকে সিলেকশন হবে।
এইযে সিলেকশন ,যার ফলে শিকার প্রজাতির বেশ কিছু প্রাণি তাদের মূল প্রজাতি থেকে আলাদা হবার ফলে বেঁচে যায়, একে বলে Apostatic Selection বা দলত্যাগী নির্বাচন।এটা একধরনের Frequency Dependent Selection. যার ফ্রিকোয়েন্সি কম, সে বেনিফিট বেশি পায়।আর এই সিলেকশনও ,স্বাভাবিকভাবে, কাজ করে শুধুমাত্র পলিমর্ফিক প্রজাতিদের ওপর। পলিমর্ফিক মানে অনেক রূপ বিশিষ্ট। অনেক রূপ না থাকলে সিলেকশনই হবেনা। আর পলিমর্ফিক হবার পর কোনো রুপ রেয়ার হলে সে শিকার হবে কম।
এই সিলেকশন দীর্ঘস্থায়ী হলে তা অনেক সময় পলিমর্ফিজম রক্ষা করতেও সাহায্য করে। কারণ, রেয়ার রূপটা বেনেফিট পেতে থাকবে,সংখ্যায় বাড়তে থাকবে, আর কমন রূপটা শিকার হতে থাকব্ সংখ্যায় কমতে থাকবে। ফলে একসময় কমন রুপটা হবে রেয়ার, আর রেয়ার রূপটা হবে কমন। তখন ঘটনা পুরো উলটে যাবে। “এক মাঘে শীত যায়না” র মতো ব্যাপার আরকি।
ফলে সামগ্রিকভাবে দুটো রূপ বা দুটো এলিলই রক্ষা পাবে, তবে একেক সময় একেক এলিলের ফ্রিকুয়েন্সি বেশি থাকবে। এভাবে পলিমর্ফিজম রক্ষা পাবে।
এপোস্ট্যাটিক সিলেকশনের সাথে কয়েকটা আনুষঙ্গিক বিষয় জড়িত। সেগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা দরকার।
একটা শিকারি তার শিকার চিনতে নিজ মস্তিষ্কে বা স্মৃতিতে যেসব ক্রাইটেরিয়া সংরক্ষণ করে, তাকে বলে Search Image. বলা যায় যে নিজের শিকারের একটা কমন ছবি সে নিজের মাথায় রাখে, এই ছবি দেখে মিলিয়েই সে শিকার ধরে। রেয়ার রূপটা এই সার্চ ইমেজের সাথে মেলে না বলেই রেয়ার রূপটা রক্ষা পায়।
যখন রেয়ার রূপটা কমন হয়ে যাবে, তখন ধীরে ধীরে সার্চ ইমেজ বদলাতে থাকবে। তবে সার্চ ইমেজ বদলানোর ব্যাপারটা অনেক জটিল বলে রেয়ার রূপটা অচিহ্নিতই থেকে যায় বেশিরভাগ সময়।
আরেকটা বিষয় হলো Prey Switching, বা শিকার বদলানো।যখন সার্চ ইমেজ বদলায় না,কিন্তু রেয়ার রূপটা কমন হয়ে যায়, তখন শিকারি বাধ্য হয় নতুন শিকার খুঁজে নিতে, না খেয়ে থাকবেনা নিশ্চই। এই ঘটনাকেই বলা হয় Prey Switching.
পর্ব-৪৯:মডার্ন সিন্থেসিস
আমরা সিরিজের একেবারে শেষ পর্যায়ে, এই পর্বের পর আর একটা পর্ব হলে সিরিজ শেষ হয়ে যাবে। বিবর্তনের মোটামুটি বেসিক প্রসেসগুলো নিয়ে আমরা জেনেছি।শেষ দুই পর্বে আলোচনা করবো বিবর্তনকে ব্যাখ্যাকারী আলোচিত মডেলগুলো নিয়ে।
ডারউইনের আগে বিবর্তনে আরেকজন প্রসিদ্ধ ব্যাক্তি ছিলেন জন ব্যাপ্টিস্ট লামার্ক। তার মতবাদ টিকে ছিলো Somatoplasm এর ওপর।মানে একটা জীব তার জীবনকালে দেহকোষে যেসব পরিবর্তন অর্জন করবে, তা সন্তানের মধ্যে পাস করে যাবে। তার ধারণা ছিলো যে দেহকোষ প্রজননে ভূমিকা রাখে। জিরাফের উদাহরণটা সবাই জানেন। যে একটা জিরাফ গাছের উপরের পাতা খাওয়ার জন্য গলা লম্বা করতে চেষ্টা করবে, এভাবে করতে করতে একসময় জিরাফ প্রজাতির গলা লম্বা হবে।নিঃসন্দেহে তা ছিলো ভুল।এরপর এলেন ডারউইন।
ডারউইন বিবর্তনকে ন্যাচারাল সিলেকশন দিয়ে ব্যাখ্যা করে তৎকালীন সবচেয়ে যৌক্তিক মডেল দান করেছিলেন। কিন্তু সমস্যা হলো, তিনি জেনেটিক্স সম্পর্কে কিচ্ছু জানতেন না। এমনকি তখনো জেনেটিক্স আবিষ্কারও হয়নি। তাই ডারউইন লোকটার প্রশংসা করতে হয়, কারণ জেনেটিক্স ছাড়াই তিনি বিবর্তনের রীতিমতো বিপ্লব এনেছিলেন। তো, ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বিখ্যাত বই, Origin of Species প্রকাশ করলেন। জেনেটিক্স বাদে এই ডারউইনের প্রকাশিত মতামতকে বলা হতো Darwinism.
ডারউইন দিলেন Pangenesis মতবাদ। যেখানে বলা হলো, দেহের প্রতিটি কোষ থেকে ক্ষুদ্র একটি অংশ জননাঙ্গে যায়, তারপর পুরুষ-স্ত্রীর মিলনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম নেয়। যেহেতু মাতা-পিতা উভয়ের দেহ থেকেই ওই ক্ষুদ্র অংশগুলো যায়, তাই সন্তানে থাকবে মাতা-পিতার বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে এমন হলে প্রজাতি হতে বৈচিত্র একসময় শূণয় হয়ে যাবে, যা ডারউইনও টের পেয়েছিলেন।
এরই কয়েক বছর পর, ১৮৬৬ সালে, মেন্ডেল তার মটরশুটি নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করলেন, “Mendelian Inheritence”। জীববিজ্ঞানের জগতে আরেকটা বিপ্লব এলো। কিন্তু তখনো জেনেটিক্স অতটা উন্নত হয়নি, যার দ্বারা ডারউইনের বিবর্তনকে ব্যাখ্যা করা যাবে।
১৮৮০ সাল, August Weismann দিলেন Germplasm মতবাদ, যা ব্যাখ্যা করা হয় Weismannian Barrier দ্বারা। তিনি বললেন দেহকোষ বা সোমাটিক সেল প্রজননে কোনো ভূমিকা রাখে না। ভূমিকা রাখে শুধুমাত্র জার্ম সেল বা গ্যামেট। তিনি এই জার্মপ্লাজম কে ঢুকিয়ে দিলেন ডারউইনের বিবর্তনের মধ্যে। পাশাপাশি তার এই নতুন মতবাদ দ্বারা মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিটেন্সের নতুন নতুন দ্বার খুলে গেল। ফলে তিনি মেন্ডেল আর ডারউইন, উভয়ের গবেষণাকে অনেকটা এক সূত্রে গেঁথে দিলেন। আর এই নতুন, পরিবর্ধিত মতবাদের নাম দিলেন Neo-Darwinism.
জার্মপ্লাজম দ্বারা মেন্ডেলের গবেষণাকে আরো ভালো ভাবে ব্যাখ্যা করা হলো। মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিটেন্সের পুনর্জাগরণের ফলে ১৯০০ সালের দিকে জন্ম হলো একদল Mendelian বিজ্ঞানীদের। তারা বললেন যে প্রাণিদের ট্রেইটগুলোর মাঝে ভিন্নতার ব্যাপকতা অনেক বেশি, যা ডারউইনের বিবর্তন নিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়না।ধাপে ধাপে এত বড় বড় বৈশিষ্ট্য অর্জিত হতে পারে না । একই সময়ে আরেকদল বিজ্ঞানী ছিলেন, Biometrician. তারা ধারণা করলেন যে অধিকাংশ জিনেরই আমাদের বৈশিষ্টয়ের ওপর কোনো বড় প্রভাব নেই।তারা ট্রেইটগুলোকে গাণিতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলেন।
উল্লেখ্য যে ১৯০০ সালের দিকে মিউটেশন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বেশ ভালো একটা ধারণা পেয়ে গিয়েছিলেন।
মেন্ডেলিয়ান আর বায়োমেট্রিশিয়ান বিজ্ঞানীদের মধ্যে এই বিতর্কের সমাধান এলো ১৯১৮ সালে। R.A. Fisher দেখালেন যে মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিটেন্সের সাথে ডারউইনের ন্যাচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে ফিনোটাইপের গ্র্যাজুয়াল পরিবর্তনের কোনো বিরোধ নেই।
ফলে মেন্ডেলের সাথে ডারউইনের গাঁথা সূত্র আরো দৃঢ় হলো।পরবর্তী বছরগুলোতে Fisher, Haldane,Sewall Wright সহ প্রমুখ বিজ্ঞানীরা এই নিও-ডারউইনিজমের সাথে গণিতের সমন্বয় ঘটালেন। ফলে মেন্ডেল,ডারউইন আর গণিত মিলে তৈরি হলো জীববিজ্ঞানের আর জেনেটিক্সের সম্পূর্ণ নতুন শাখা, Population Genetics.
ধীরে ধীরে বিবর্তনকে ব্যাখ্যাকারী এই নতুন তত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকলো।
Theodosius Dobzhansky গবেষণা করলেন Drosphila নামক ফ্রুটফ্লাই প্রজাতির ওপর, যা বিবর্তনের এই নতুন তত্ত্বের পক্ষে শক্তপোক্ত প্রমাণ দিলো।Ernest Mayr গড়ে তুললেন Biological Species এর ধারণা, পাশাপাশি প্রজাতিকরণের কতগুলো মডেল প্রদান করলেন। George Gaylord Simpson নিও-ডারউইনিজমের মধ্যে Paleontology বা ফসিলবিদ্যা পরবেশ করালেন, যার ফলে ফসিলের মাধ্যমে আমরা বিবর্তনের চাক্ষুষ প্রমাণ পেলাম। G. Ledyard Stebbins তার বোটানিকাল গবেষণার মাধ্যমে বিবর্তনের বেশ কিছু প্রিন্সিপাল প্রতিষ্ঠা করলেন।
এভাবে অনেক বিজ্ঞানীর অনেক আগে ১৯৪২ সালে Julian Huxley তার বই Evolution:The Modern Synthesis প্রকাশের মাধ্যমে এই নাম Modern Synthesis এর প্রচলন ঘটান।
Modern Synthesis কে Neo-Darwinism এর সমার্থক শব্দ হিসেবেই দেখা হয়।এভাবে অনেক বিজ্ঞানীর অনেক গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানে বিবর্তনের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল ক্ষেত্র মডার্ন সিন্থেসিসের সাথে যুক্ত হয়েছে, একে সমৃদ্ধ করেছে।আর এই তত্ত্বে, তর্কসাপেক্ষে, ডারউইনের অবদান অনেক বেশি, তার দ্বারাই এর সূচনা। তাই একে Darwinian Evolution ও বলা হয়ে থাকে।
এই ছিলো আমাদের মডার্ন সিন্থেসিসের অতিক্ষুদ্র ইতিহাস।
মডার্ন সিন্থেসিস হলো ২০ শতকের শুরু থেকে মধ্যভাগের মাঝে একদল তুখোর বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ডারউইনের মতবাদ ও মেন্ডেলের মতবাদের মাঝে সমন্বয়সাধনকারী তত্ত্ব, যা বিবর্তনকে সবচেয়ে যৌক্তিক ভাবে ব্যাখ্যা করে ।কিন্তু তা ডারউইন আর মেন্ডেলের মাঝে থেমে নেই, মাঝের প্রায় ১০০ বছরের বেশি সময়ে তা বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে আর এগিয়ে যাচ্ছে।
মডার্ন সিন্থেসিস অনুযায়ী বিবর্তনের সংজ্ঞা হলো : Changes in allele frequencies within populations.
মানে, মাত্র একটা মাত্র জিনোটাইপের ফিক্সেশন হলেও সেটা বিবর্তন। মডার্ন সিন্থেসিস অনুযায়ী বিবর্তনের চালিকা শক্তি চারটা-
1.Natural Selection
2.Mutation Pressure
3.Genetic Drift
4.Gene Flow
অধিকাংশ মিউটেশনই ডিলেটারিয়াস বা ক্ষতিকর।যেসব মিউটেশন ভালো বলে প্রমাণিত হয় তাদের শুধুমাত্র একটা ছোট ফিনোটাইপিক প্রভাব থাকে।তাই বিবর্তন হয় খুবই ধীরে ধীরে, ধাপে ধাপে।আর প্রজাতি তৈরি হয় রিপ্রোডাকক্টিভ আইসোলেশনের মাধ্যমে।
এই ছিলো মডার্ন সিন্থেসিসের মূল কথা। ডারউইনের পর থেকে আজ পর্যন্ত অসংখ্য বিজ্ঞানীর অসংখ্য গবেষণা দ্বারা বিবর্তন তত্ত্ব সংশোধিত, পরিবর্ধিত হয়েছে, এবং আজও হচ্ছে।খোদ ডারউইন আর মেন্ডেলেরও অনেক ভুল ছিলো, মডার্ন সিন্থেসিসের মাধ্যমে সেগুলোও বাদ দেয়া হয়েছে। আর এভাবেই মডার্ন সিন্থেসিস এগিয়ে চলছে।