বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, পৃথিবীতে প্রায় ৪.২ বিলিয়ন বছর আগে পানি থাকা সম্ভব,এর আগে থাকা সম্ভব না, যদিও থেকে থাকে, তাহলে ৪.৪ বিলিয়ন বছর আগের থিয়া নামক গ্রহের সাথে পৃথিবীর সংঘর্ষে সেই পানি মহাকাশে ছিটকে গিয়েছিল, আর একটু-আধটু যদি পৃথিবীতে থেকেও থাকে, তা বাষ্পীভূত আকারে ছিল পৃথিবীর প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে।
৪.২বিলিয়ন বছর আগেই তরল পানির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।তাই এটাই বেশি যুক্তিযুক্ত যে, সেই সময়েই বা তার কিছু পরে পৃথিবীতে পানির আবির্ভাব হয়।কিন্তু এত পানি পৃথিবীতে এল কোথা থেকে?
একটু আগে চলে যাই,বিগ ব্যাং এর ঠিক পরপর সময়টাতে। ইলেক্ট্রন তখন কেবল সাবালক হয়ে হয়েছে,মানে পরমাণু গঠনের জন্য উপযুক্ত আর কি। আর তাই প্রোটনের প্রেমে বাধা পড়ে প্রথম পরমাণু, হাইড্রোজেন তৈরি করেছে।
একারণে সমগ্র মহাবিশ্বে সবচেয়ে সুলভ মৌল হলো হাইড্রোজেন।কারণ হাইড্রোজেন গঠন খুবই সহজ, একটা প্রোটন আর একটা ইলেক্ট্রন। আর একটু শক্তি লাগে, আর সেই সময় মহাবিশ্বে শক্তির অভাব ছিল না! দিন যেতে লাগল, ধীরে ধীরে হিলিয়াম,লিথিয়াম, বোরন এর মতো ভারী এবং অপেক্ষাকৃত জটিল মৌলগুলো ফিউশনের মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ায় তৈরি হতে লাগল। গ্যাসের কুণ্ডলী জমা হলো,যাকে বলে নেবুলা। সেটা ঘনীভূত হয়ে নক্ষত্রের জন্ম দিল।সেইকালের নক্ষত্রগুলো ছিল দামড়া দামড়া।
বড় বড় নক্ষত্রের জীবনের একটা পর্যায়ে সুপারনোভা এক্সপ্লোশন হয়। আর বিগ ব্যাং এর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন বছর পর এমন প্রথম সুপারনোভা এক্সপ্লোশন হয়।এটা হওয়ার সময় কেন্দ্রে প্রচণ্ড চাপ-তাপ উৎপন্ন হয়, যেটা ফিউশন হওয়ার জন্য উপযুক্ত জায়গা। সেখানেই ফিউশনের মাধ্যমে তৈরি হয় অক্সিজেন পরমাণু।এবার মহাকাশে মুক্ত হয়ে ঘুরতে থাকে অক্সিজেন।
হঠাৎ কোনো একদিন হাইড্রোজেনের সাথে অক্সিজেনের দেখা হয়, একে অপরকে পছন্দ করে, কিন্তু অক্সিজেনের দরকার ২ টা হাইড্রোজেন, যোজনীর মতো ২ হাতে ২ জন হাইড্রোজেনকে নিয়ে ঘোরার জন্য। তাদের বিয়ের জন্য কাজী হিসেবে ছিল শক্তি, যে কিনা নিকটস্থ কোনো নক্ষত্রের বিস্ফোরণ থেকে এসেছিল।বিয়ে হয়ে গেল, ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে আমরা পেয়ে গেলাম মহাবিশ্বের প্রথম পানির অণু!
অক্সিজেনও মহাবিশ্বে বেশ সুলভ,কিন্তু হাইড্রোজেনের মতো অত সুলভ না। তাই মহাবিশ্বে পানির অণু ও বেশ সুলভই।এবার এই পানি মহাবিশ্বের শূণ্যতার মাঝে সব তাপ ছেড়ে দিয়ে বরফ কণা হয়ে ঘুরতে লাগল। বিভিন্ন গ্রহে, উপগ্রহে, উলকায়, গ্রহাণুতে তাই এই পানি পাওয়া যায়। এবার বহুদিন পর সৌরজগৎ গঠির হলো,সেখানেও মঙ্গল গ্রহ আর বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে এস্টরয়েড বেল্ট আছে। মানে অবশ্যই পানি আছে।
৪.১ থেকে ৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে অনেকগুলো, অনেক মানে অনেএএএকগুলো গ্রহাণু পরপর পৃথিবীতে আছড়ে পরে,তাই এই সময়টার নাম দেয়া হয় Last heavy bombardment period. সেই গ্রহাণুগুলোতে পানি ছিল। এভাবে পৃথিবীতে পানি জমা হয়।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে গ্রহাণুর মাধ্যমেই পৃথিবীতে পানি আসে?
সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের, উল্কার, আর ধূমকেতুর পানি নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। আর তার সাথে পৃথিবীর পানির মিল পাননি। আমরা জানি হাইড্রোজেনের প্রকৃতিতে প্রাপ্ত ৩ টা আইসোটোপ, প্রোটিয়াম,ডিউটোরিয়াম আর ট্রিটিয়াম। এর মধ্যে ট্রিটিয়াম তেজস্ক্রিয়।প্রত্যেকটাই পানি গঠন করে। প্রোটিয়াম গঠন করে নর্মাল পানি, ডিউটোরিয়াম ভারী পানি আর ট্রিটিয়াম তেজস্ক্রিয় পানি।
বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর পানিতে এই আইসোটোপগুলোর অনুপাত বের করেছেন, আর তার সাথে মিল আছে কেবল গ্রহাণুর পানির অনুপাতের।অন্য কোনো জায়গার পানির না। তাই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হলেন, যে ৪.১ থেকে ৩.৮ বিলিয়ন বছর আগেই পৃথিবীতে গ্রহাণুর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ পানি জমা হয়। আর সেখানেই ধীরে ধীরে গঠিত হয় প্রাণ!
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,কারণ কথামতো এইবারও আমি প্রথম লিপিডের গঠন নিয়ে আলোচনা করছি না। কারণ, যখন লিপিডের গঠন হওয়া নিয়ে লিখতে গেলাম,দেখলাম যে আরো কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা না থাকলে শুধু লিপিড কেন, বাকি দুইটি উপাদানের গঠিত হওয়াও বোঝা যাবে না।তাই আজ ও আগামী পর্ব থাকবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে,তারপর প্রথম লিপিডের গঠন আলোচনা করব।
১৬০০ সালের দিকে এইটা বিশ্বাস করা হতো যে, যদি আমি কোনো জায়গায় কাচা কোনো খাদ্য রেখে দেই, তাহলে সেখানে প্রাণের আবির্ভাব হবে একদম শূণ্য থেকে, মানে পোকা-মাকড় এমনকি ইদুর পর্যন্ত হঠাৎ করে শূণ্য থেকে হাজির হবে,মাতা-পিতা ছাড়া।একে বলা হতো স্পন্টেনিয়াস জেনারেশন।
কিন্তু পরবর্তীতে ১৮০০ সালের দিকে বিভিন্ন পরীক্ষা এই তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করে।নতুন একটা তত্ত্ব এল, “প্রাণ একমাত্র প্রাণ থেকেই আসে”। মানে, হঠাৎ করে কোনো জীবের আবির্ভাব হতে পারে না, তাকে প্রজননের মাধ্যমেই জন্ম নিতে হবে। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকে যায়, পৃথিবীতে এই প্রাণের আবির্ভাব কীভাবে?এ নিয়ে নানা তত্ত্ব আছে,আজ আলোচনা করব একটা নিয়ে। বিশ্ববিখ্যাত ডারউইন, যিনি তার বিবর্তনবাদের তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত,এবায়োজেনেসিস নিয়েও উল্লেখযোগ্য একটা কাজ করেছেন। আর তা হলো, “প্রিমর্ডিয়াল স্যুপ থিওরি”‘র ধারণা দেয়া।
ডারউইন একদিন তার এক বন্ধুকে চিঠি লিখলেন,”যদি একটা ছোট উষ্ণ জলাশয়ে ফসফরিক লবণসমূহ, এমোনিয়া যথেষ্ট মাত্রায় থাকে, এবং সেখানে তাপ,আলো আর বিদ্যুৎ (বজ্রপাত) এর অবকাশ থাকে,তাহলে সেখানে একটা প্রোটিন অণুর গঠিত হওয়া বেশ সোজা এবং এটা আরো উন্নতির মধ্য দিয়ে বিবর্তিত হতে প্রস্তুত”। ১৯২৪ সালে রাশিয়ান বায়ো-কেমিস্ট আলেক্সান্ডার ওপারিন একটা মত প্রকাশ করলেন।
সাধারণ অণু থেকে জৈব অণু বা বায়োমনোমার তৈরি হবে,সেটা থেকে আরেকটু জটিল জৈব যৌগ তৈরি হবে, সেটা যুক্ত হয়ে বায়ো-পলিমার তৈরি হবে, সেটা থেকে এবার বিপাকে সক্ষম একটা গঠন হবে,আর সেটা থেকে প্রথম প্রাণ বা কোষের আবির্ভাব হবে।তিনি সমুদ্রকে ভাবলেন একটা জলাশয়, যেখানে প্রাকৃতিক ভাবে বিক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত নানা অণুতে পরিপূর্ণ ছিল পানি।এখানেই নাকি আরো জটিল জটিল বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রথম কোষ তৈরি হতে পারে।
১৯৫০ সালে শিকাগো ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট ছাত্র,স্ট্যানলি মিলার একটা বুদ্ধি করলেন,তিনি বায়োলজি ল্যাবে সেই আদিম পৃথিবীর মতো অবস্থা তৈরি করলেন,সেখানে প্রাণ তৈরি হয় কিনা।এখান থেকেই তিনি ওপারিনের তত্ত্বের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন।তার প্রফেসর হ্যারল্ড ইউরি তাকে সাহায্য করেন। তারা একটা এক্সপেরিমেন্ট আয়োজন করলেন, যেখানে পানি নিলেন, সমুদ্রের প্রতিনিধি হিসাবে। আর।
মিথেন,এমোনিয়া,হাইড্রোজেন এর মতো গ্যাস নিলেন বায়ুমণ্ডলের জন্য। আর সেই পৃথিবীতে শক্তির উৎস হিসেবে সূর্য,পৃথিবীর জিও-থার্মাল তাপ, অথবা বজ্রপাত ছিল। তারা সেখানে যুক্ত করলেন বিদ্যুৎ বা স্পার্ক, বজ্রপাতের কাজ করতে।পানিকে তাপ দেয়া হয়, গ্যাসে মধ্য দিয়ে বাষ্প চালনা করা হয়।
তা আবার সেই স্পার্কের সংস্পর্শে আসে।মানে প্রাচীন পৃথিবীর একটা পরিবেশ তৈরি হয়।তাদের উদ্দেশ্য ছিল জড় পরমাণু-অণু থেকেও যে জীবনের জন্য জৈব যৌগ গঠিত হতে পারে,তা প্রমাণ করা। সরাসরি জীবন সৃষ্টি করা না। ৭ দিন পর দেখা গেল পানিটা গোলাপি-খয়েরি রঙ ধারণ করেছে, কাঁচের গায়ে কেমন আঠালো একটা কালো ধরনের পদার্থ তৈরি হয়েছে।বিশ্লেষণ করে জানা গেল, অনেকগুলো বিক্রিয়া হয়ে সেখানে অনেক জটিল যৌগের আবির্ভাব হয়েছিল।
মিথেনের ১০%-১৫% কার্বন থেকে জৈব যৌগ গঠিত হয়।যাদের মধ্যে ২ % কার্বন ছিল এমিনো এসিডে, যারা প্রোটিন তৈরির উপাদান,যা জীবনের জন্য অপরিহার্য।কিন্তু, এর আগে ধারণা ছিল যে এমিনো এসিড শুধুমাত্র জীবন্ত প্রাণীদেহের ভেতরেই তৈরি হয়।তারা এই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করলেন এবং ওপারিনের ধারণাকে আরো যুক্তিযুক্ত করলেন।
এই পরীক্ষার নাম ইউরি-মিলার এক্সপেরিমেন্ট।এটা দ্বারা ধারণা করা হলো যে প্রাচীন পৃথিবীর এমন কোনো জলাশয়েই প্রাণের আবির্ভাব, যেখানে অনেক মৌল-যৌগ ছিল,আর শক্তির উৎস ছিল বজ্রপাত। ইংরেজ বিজ্ঞানী হ্যালডেন, এমন একটা আদর্শ জলাশয়ের নাম দেন প্রিমর্ডিয়াল স্যুপ, যা ডারউইনের সেই উষ্ণ ছোট জলাশয়েরই মতো।
১৯৬০ সালে আরেক গবেষণায় জানা যায় যে হাইড্রোজেন সায়ানাইড আর এমোনিয়া বিক্রিয়া করে শুধু এমিনো এসিড না,বিশাল পরিমাণে এডেনিন তৈরি করতে পারে,যা একটা নিউক্লিওটাইড বেস, ডিএনএ ও আরএনএ এর উপাদান এবং এটা আমাদের দেহে শক্তির রূপ, এটিপি এরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তাই,ধীরে ধীরে এই “প্রিমর্ডিয়াল স্যুপ থিওরি” প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। বায়োকেমিস্ট রবার্ট শ্যাপরিও,ওপারিনের এই তত্ত্বের সারাংশ এভাবে প্রকাশ করেছেন,
- প্রাচীন পৃথিবীতে অক্সিজেন খুবই কম ছিল।
- এমন একটা পরিবেশে যদি কোনোভাবে শক্তির সংস্পর্শ পাওয়া যায়,তাহলে সরল জৈব অণু গঠিত হতে পারে।
- এমন যৌগগুলো কোনো জলাশয়ে যেকোনো জায়গায় ঘনীভুত হয়ে ছিল।
- ওপারিনের মতে,প্রাচীন পৃথিবীর ভূমি একটা ঘন উষ্ণ লাল রঙ এর আবরণ দিয়ে ঢাকা ছিল,যেটাতে কার্বনের মতো ভারী মৌল ছিল, কার্বন ছিল আয়রন-কার্বাইড রূপে।আর বায়ুমণ্ডলে ছিল হাইড্রোজেনের মতো হালকা গ্যাসগুলো।জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে কার্বাইড, হাইড্রোজেনের সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোকার্বন তৈরি করে,যা ছিল একেবারে প্রথমদিকের জৈবযৌগ।এগুলো আবার অক্সিজেন আর এমোনিয়ার সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রক্সি আর এমিনো গ্রুপগুলো তৈরি করত।যেমন কার্বোহাইড্রেট আর প্রোটিন।এরা সমুদ্রের উপরিভাগে জেলীর ন্যায় আকারে ছিল,যারা বড় হতো।তারাই আদি-কোষের আবির্ভাব ঘটায়।এখানে, ওপারিন বায়ুমণ্ডলে প্রচুর অক্সিজেন ধরেছিলেন,কিন্তু পরবর্তীতে তিনি অক্সিজেনের বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত থাকা অস্বীকার করেন।এই থিওরি অনেক জনপ্রিয় হয়, আরো গবেষণা হয়। আর গবেষণার সাথে উঠে আসতে থাকে তথ্য। যারা নিজেরা নিজের খাদ্য তৈরি করে,তাদের বলে অটোট্রফ,আর যারা অন্যদের খায়,তাদের বলে হেটেরোট্রফ। যেহেতু প্রাচীন পৃথিবীতে অন্য কেউ ছিলনা খাওয়ার মতো,তাই নিশ্চই প্রথম প্রাণকে নিজের খাদ্য নিজেকে তৈরি করতে হয়েছে। তাই প্রথমে অটোট্রফের আবির্ভাবই হয়েছিল।কিন্তু এই তত্ত্ব অনুসারে, প্রথম প্রাণ, যা কিনা অটোট্রফ হওয়ার কথা, তা সমুদ্রের ওপরে ছিল। কিন্তু সেকালে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির তীব্রতার কারণে তা বেচে থাকার কথা নয়।আবার এই পদ্ধতিতে উৎপন্ন অণুগুলো হবে স্বল্পস্থায়ী আর নিতান্ত কম পরিমাণে।উচ্চতাপ আর সূর্যরশ্মি তাদেরকে ধ্বংস করে দেব, ফলে আর বিক্রিয়া হবে না, প্রাণও গঠিত হবে না। আবার, এই তত্ত্বে, বজ্রপাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ,তা অবিরত চলা দরকার। কিন্তু অবিরাম বজ্রপাত সম্ভব নয়। আবার প্রাচীন বায়ুওমণ্ডলে মিথেন কম ছিল, যা তারা বেশি নিয়েছিলেন।আবার যখন সঠিক পরিমাণ গ্যাস দিয়ে একই পরীক্ষা করা হয়, খুবই কম পরিমাণে জৈব যৌগ তৈরি হয়। যা প্রাণ গঠনের জন্য যথেষ্ট নয়।তাই,এই থিওরির ভিত্তিও নড়ে গেল।
লিখাঃতাহসিন আহামেদ অমি