বর্তমানে আমাদের দেশে সহ সারা বিশ্বে ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়া একটি প্রধান সমস্যা। আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার মূল কারন আমাদের অসচেতনতা আর আমাদের অসচেতনতার কারনে আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে থাকে।
ফেসবুক আইডি কে কিভাবে নিরাপদ রাখা যায় সে সব বিষয়ে আলোচনা করবো। আশা করি সবাই নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করবেন 😊😊
★ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের যে অসচেতনতা দেখা যায় সেগুলো হলো –>>>
❌Login এর সময় Email address এর পরিবর্তে Mobile Number ব্যবহার করা।
❌ 2 step Verification অথবা 2 factor Authentication Enable না করা।
❌ দুর্বল পাসওয়ার্ড বা সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ডের ব্যবহার (যেমনঃ আপনার মোবাইল নম্বর, ডাক নাম, সন্তানের নাম, জন্ম তারিখ, পিতা মাতার নাম ইত্যাদি)
❌ আপনার ফেসবুক আইডির নাম, জন্ম তারিখ,Original নাম ও জন্ম তারিখ থেকে আলাদা হওয়া।
❌ জন্ম তারিখ Public রাখা।
❌ ফেসবুক ও যে Email দিয়ে facebook id খুলেছেন তার পাসওয়ার্ড একই থাকা। তাহলে হ্যাকার যখন আপনার Facebook হ্যাক করবে, সাথে সাথে আপনার Email Id ও হ্যাক হয়ে যাবে।
★কিভাবে আপনার Facebook ID কে Secure করবেন? –>>>
✔ Mobile Number এর পরিবর্তে Email Address ব্যবহার করুন।
কারন আপনার Password হ্যাকার চেঞ্জ করলে সাথে সাথেই Facebook আপনার Email এ Mail পাঠিয়ে আপনাকে সতর্ক করবে। সেখানে Recovery Link দেয়া থাকে। তাতে ক্লিক করে আপনি সহজেই আইডি Recover করতে পারবেন।
✔ ফেসবুকের সেটিংস থেকে Security and login>use two-factor authentication এ গিয়ে আপনার মোবাইল নম্বর যুক্ত করুন।
এর পর অন্য কোন মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে আপনার আইডি তে লগইন করার চেষ্টা করুন, দেখুন পাসওয়ার্ড দেবার পর কোড চায় কিনা।
যদি চায় তাহলে আপনার 2 factor Authentication চালু হয়েছে। এখন কেউ আপনার ইমেইল+পাসওয়ার্ড জানলেও আপনার মোবাইল হাতে না পেলে হ্যাক করতে পারবে না।
✔ অনেকের পাসওয়ার্ড থাকে শুধু মাত্র সংখা দিয়ে যা অত্যন্ত দুর্বল। পাসওয়ার্ড তৈরি করুন Capital letter, small letter, number & symbol মিলিয়ে। ৮ ক্যারেক্টারের নিচে পাসওয়ার্ড না হওয়াই উত্তম।
✔ সেটিংস এ গেলে ১টি Option আছে Choose 3 to 5 friends to contact if you get locked out. এখানে আপনি আপনার ৩ থেকে ৫ জন কাছের মানুষকে সংযুক্ত করুন যাদের সাথে আপনার সরাসরি/ফোনে যেকোন সময় যোগাযোগ করতে পারবেন।
যদি আপনার আইডি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে তাদেরকে বলতে হবে Facebook.com/recover এ লিংকে যেতে। তারা সেখানে আপনার আইডি রিকভার করার জন্য কোড পাবে আর সে কোড ব্যবহার করেও আপনি আপনার আইডি রিকভার করতে পারবেন।
✔ বর্তমানে আইডি রিকভার করতে গেলে ফেসবুক ভিকটিমের আইডি কার্ডের ছবি চায়। কিন্তু দেখা যায় যে, আইডি কার্ডে যে নাম ও জন্ম তারিখ আছে তার সাথে ফেসবুকের নাম ও জন্ম তারিখ মেলে না।
ফলে Recover করা সম্ভব হয় না। সুতরাং অবশ্যই আপনার আইডিতে যে নাম ও জন্ম তারিখ আছে তা ব্যবহার করুন।
✔ আপনার জন্ম তারিখ বা Birthday Date যদি ওপেন থাকে তাহলে আপনি ১ ধরনের আক্রমনের আওতায় রয়েছেন।
১ গ্রুপের হ্যাকার রয়েছে যারা আপনার ফেসবুকের নাম ও জন্ম তারিখ মিলিয়ে মিথ্যা পরিচয় পত্র তৈরি করে আপনার আইডির কন্ট্রোল আপনার কাছে নিয়ে নেয়। সুতরাং কখওই জন্ম তারিখ বা Birthday Date ওপেন থাকা উচিত নয়।
★ আমাদের সকলকে ফেসবুকে যে সকল কার্যক্রম থেকে অবশ্যই বিরত থাকা উচিত –>>>
⚠ কখনোই আপনার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ফেসবুকে বিশেষ করে ম্যাসেঞ্জারে কারো সাথে শেয়ার করবেন না। দেখা যায় যে অনেকেই তার আপনজনের সাথে তাদের ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার করে।
পরবর্তিতে ঐ দুই জনের যে কোন একজনের ফেসবুক হ্যাক হয়ে গেলেই হ্যাকার ঐ সকল ছবি সংগ্রহ করে ব্লাকমেইল করা শুরু করে।
⚠ অনেকে ফেসবুকে Secret Album তৈরি করে তাতে তার বিভিন্ন ছবি, সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড সংরক্ষন করে থাকে।
এটি হ্যাকারদের জন্য হীরার খনি। আপনার আইডি হ্যাক হওয়া মানে আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য তার কাছে চলে গেল। এটা কখনোই করা উচিত নয়।
⚠ কোন লিংকে ক্লিক করে যদি ফেসবুকে রিডাইরেক্ট হয়ে যান ও সেখানে ফেসবুকের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিতে বলা হয়, তাহলে সম্ভবত আপনাকে Phishing করা হচ্ছে।
ভুলেও সেখানে আইডি, পাসওয়ার্ড দেবেন না। যে সাইটে গেলেন তার URL আগে খুব ভাল করে দেখে নিন। Facebook না Faecbook এ গেলেন? প্রয়োজনে অন্য ১টি ট্যাবে আলাদা ভাবে নিজে ব্রাউজ করে ফেসবুকে গিয়ে লগ ইন করুন।
⚠ হঠাৎ আপনার ইনবক্সে আপনার যে কেউ ম্যাসেজ পাঠাতে পারে যে, আমি ওমুক ১টা ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে দেখলাম যে আপনার কিছু অসামাজিক ছবি আপলোড করা হয়েছে।
নিচে লিংক দেয়া আছে। ক্লিক করলে আপনার ১টি এডিটেড ছবি ও তার নিচে লগ ইন করে বাকি সব ছবি ও ভিডিও দেখার জন্য বলা থাকতে পারে। এটাও এক ধরনের ফিশিং।
আসলে আপনি লগইন করতে গেলে আপনার ফেসবুকের আইডি আর পাসওয়ার্ড চুরি হয়ে যাবে।
⚠Mobile এ যে সকল কোড আসবে তা কখনোই কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
⚠ “ঘুম থেকে উঠলাম”, “ক্লাসে যাচ্ছি”, “কিছু ভাল লাগছে না” এই টাইপের স্টাটাস না দেয়া উচিৎ।
ধরুন আপনি আপনার পুরো ফ্যামিলি নিয়ে ইদে গ্রামের বাড়ী বেড়াতে যাচ্ছেন। রেলগাড়ীতে উঠে ১টা স্টাটাস, বাড়ী পৌছে আর ১টা স্টাটাস দিলেন।
আর আপনার ফ্রেন্ড লিষ্টে থাকা কোন এক জন ব্যক্তি বুঝে গেল যে আপনার বাড়ী ফাঁকা, আর এ সুযোগে আপনার বাসার সব চুড়ি করে নিয়ে গেল। আপনার একটি সাদামাটা পোষ্ট আপনার ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াতে পারে।
⚠ অনলাইনে যে কোন পোষ্ট বা কমেন্ট করার আগে চিন্তা ভাবনা করে করা উচিৎ।
সর্বশেষে বলা যায় আপনার ফেসবুক আইডি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ। এটির সিকিউরিটিও আপনার কাছে।