নাসায় চাকরি করার জন্য বেশ যোগ্যতার প্রয়োজন। কারণ, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পরিচালনা, কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠানো, মহাকাশ থেকে আবহাওয়ার নজরদারি, সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের তথ্য উদ্ঘাটনে বিভিন্ন মহাকাশ মিশন পরিচালনাসহ নানা ধরনের কাজ করে নাসা। চাঁদ ও মঙ্গলে বসবাসের সম্ভাবনা সম্পর্কেও করে গবেষণা।
এই সংস্থায় চাকরির জন্য নিজেকে প্রমাণ করতে হয় নানা দিক থেকে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। আগ্রহী প্রার্থীকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশলী, গণিতে স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি থাকতে হয় প্রয়োজনীয় কাজের অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতামূলক এ ধরনের পরীক্ষায় দলীয় সমন্বয়, যোগাযোগ, ভাষা ও বাজেট সমন্বয়ে অধিক দক্ষ প্রার্থীরা এগিয়ে থাকেন। বিমান চালনা বিদ্যা, মহাকাশ স্টেশন, সৌরপ্রক্রিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি, পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের বিষয়গুলোতেও ভালো ধারণা থাকতে হয় চাকরিপ্রত্যাশীদের। চাকরিপ্রত্যাশীদের যোগ্য থাকতে হয় শারীরিকভাবেও। চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকার পাশাপাশি, রক্তচাপও স্বাভাবিক হতে হবে, যা কি না হতে হয়—১৪০/৯০। উচ্চতা হতে হবে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি থেকে ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি।
সাক্ষাৎকারঃ
সাক্ষাৎকারের বিভিন্ন ধাপে প্রার্থীকে টিকে থাকার কঠিন লড়াইয়ে নামতে হয়। প্রার্থীকে নাসার বাছাই কমিটিকে সন্তুষ্ট করতে হবে। কারণ, এই দুর্লভ সুযোগ বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন মানুষই পান। নাসার কোনো একটি পদের জন্য কমপক্ষে ১০০ জন সমান যোগ্যতার প্রার্থী থাকেন। তাই তাঁদের সবাইকে পেছনে ফেলে কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি হাতিয়ে নিতে হলে যোগ্যতার পাশাপাশি ভাগ্যেরও সহায়তা দরকার।
এমনও দেখা যায় যে ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়োগের জন্য ২০ হাজারের বেশি যোগ্য ব্যক্তি আবেদন করেছেন। সচরাচর ২০ হাজার জনের চাকরি পাওয়ার মতো সব যোগ্যতা থাকার পরও চাকরি পাবেন ১০ থেকে ১২ জনই। যেমন এবার ১৮ হাজার ৩০০ আবেদনের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হবে মাত্র ১২ জনকে।
সাক্ষাৎকারের পরের ধাপঃ
সাক্ষাৎকারের পরের ধাপে নির্বাচিত হওয়ার পরই নাসায় চাকরি হয়ে গেল—ধরে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, এরপরও বেশ কিছু ধাপ পেরোতে হবে। দুই বছরের কঠোর প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হতে হবে প্রার্থীকে।
চার বছরের কলেজ ডিগ্রি অর্জনের জন্য যে ধরনের পরিশ্রম করতে হয়, এ দুই বছরে তার থেকে অনেক বেশি চাপ সহ্য করতে হয়। প্রশিক্ষণ নেওয়া দলের সবাইকে যেকোনো পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার মতো যোগ্যতা দেখাতে হয়। এ জন্য পানিতে সাঁতরানোর অভিজ্ঞতাও থাকতে হয়। মহাশূন্যে যে ধরনের পরিবেশে কাটাতে হয়, তাদের আগে থেকেই সেই ধরনের পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। জেট এয়ারক্রাফটে শূন্য মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশের সঙ্গেও খাপ খাইয়ে নিতে হয় প্রশিক্ষণার্থীদের।